‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব সীমান্ত বাণিজ্যে’
প্রতিবেদকঃ মোঃ রিয়াদ হোসেন
বাংলাদেশে রাজনৈতিক
অস্থিরতার জেরে পশ্চিমবঙ্গের
পেট্রাপোল বন্দরে এর ব্যাপক
প্রভাব পড়েছে। এক্সপোর্টাররা
পেট্রাপোল বন্দর থেকে
বাংলাদেশের বেনাপোল
বন্দরে পণ্যবাহী ট্রাক পাঠিয়ে
নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না।
একইভাবে বেনাপোল বন্দর থেকে
তুলনামুলকভাবে ইমপোর্টের ট্রাক
অনেক কম আসছে। ফলে লোড-
আনলোডের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা
কাজ হারিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন।
এ ছাড়াও দৈনন্দিন লোকজনের
আসা-যাওয়া কমে যাওয়ায়
মুদ্রাবিনিময় ব্যবসাও সংকটে
পড়েছে।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড
ফরওয়ার্ডিং স্টাফ ওয়েলফেয়ার
এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি
কার্ত্তিক চক্রবর্তী আজ (শনিবার)
জানান, ‘ভারতের পেট্রাপোল
থেকে বাংলাদেশের
বেনাপোল বন্দরে পণ্যবাহী
রফতানির ট্রাক গেলে অনেকদিন
লেগে যাচ্ছে খালি হতে।
এরফলে রফতানিকারক সংস্থার
ক্ষতি হচ্ছে। দৈনিক ডিটেনশন
চার্জ দিতে হচ্ছে। একইভাবে
আমদানিকারক সংস্থাও
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যে দামে পণ্য
কেনা হয়েছে, দেখা যাচ্ছে
অনেকদিন বন্দরে আটকে থাকার
ফলে সেই পণ্যের দাম আরো
বেড়ে যাচ্ছে মার্কেটে। এতে
ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দু'দেশের
ব্যবসায়ীরা।’
কার্ত্তিক চক্রবর্তী জানান,
‘অলিখিতভাবে এই মুহূর্তে
বাংলাদেশে দাহ্য পদার্থ
রফতানি বন্ধ রাখা হয়েছে।
শুধুমাত্র বাণিজ্যিক কারণে
বিভিন্ন কেমিকেল রফতানি করা
হচ্ছে। বাড়িতে ব্যবহারের জন্য
এসিড জাতিয় দ্রব্য পাঠানো বন্ধ
রয়েছে। এগুলো যাতে কোনও
নাশকতামূলক কাজে ব্যবহার না হয়,
সেজন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
'পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড
ইমপোরটার্স ওয়েলফেয়ার
এসোসিয়েশন' এর প্রেসিডেন্ট
মীর আব্দুল হাসেম
জানান,‘পেট্রাপোল থেকে নতুন
ট্রাকের চ্যাসিস, ট্রাক্টর এবং বড়
বড় সামগ্রী বেনাপোলে গিয়ে
পড়ে থাকছে। সেখানে ২০ দিন ২৫
দিন করেও লেগে যাচ্ছে ট্রাক
খালি হতে। বেনাপোল বন্দর
থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম প্রভৃতি
জায়গায় যেসব সামগ্রি যাওয়ার
কথা সেগুলো সেখানে
লাগাতার বনধ, অবরোধ ইত্যাদির
কারণে যেতে পারছে না। বন্দর
থেকে ঠিকমত ডেলিভারি না
হওয়ার কারণে ভারতের
পেট্রাপোল বন্দর থেকে পণ্যবাহী
ট্রাক আশানুরূপ ভাবে বেনাপোল
বন্দরে যেতে পারছে না। এরফলে
ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।’
'পেট্রাপোল মুটিয়া মজদুর ইউনিয়ন'
এর প্রেসিডেন্ট জামাল আলী
মন্ডল জানান, ‘পেট্রাপোল বন্দরে
সব সংগঠন মিলিয়ে প্রায় হাজার
খানেক শ্রমিক কাজ করে। কিন্তু
বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দর
থেকে পণ্যবাহী ট্রাক ঠিকমত
পেট্রাপোলে না আসায়
দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমিকরা।’
জামাল আলী মণ্ডল
জানান,‘বাংলাদেশ থেকে গত
শনিবারে ৮০ ট্রাক পণ্য এসেছিল।
এরপর থেকে গড়ে দৈনিক ৫০
থেকে ৫৫ ট্রাক পণ্য এসেছে
সেদেশ থেকে। ফলে লোড
আনলোডে কর্মরত শ্রমিকরা দৈনিক
৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা আয়ের বদলে
গত এক সপ্তাহ ধরে তারা মাত্র ৯০
টাকা করে মজুরি পেয়েছেন।
এভাবে কাজ হারিয়ে সংসার
চালাতে গিয়ে চরম সংকটে
পড়েছেন তারা।' বাংলাদেশ
থেকে এখন কাপড়ের টুকরো,
সুপারি, চটের রোল ইত্যাদি
আসছে বলেও তিনি
জানিয়েছেন।
Created at 2015-03-21 03:15:03
Back to posts
UNDER MAINTENANCE